KGRE

দক্ষিণ এশিয়ার অন্তত ৬ দেশে ভূমিকম্প, বাংলাদেশেও কম্পন অনুভূত

Untitled design 6 1

দক্ষিণ এশিয়ায় আবারও আঘাত হেনেছে ভূমিকম্প। রোববার স্থানীয় সময় বিকাল ৫টা ১১ মিনিটের দিকে রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৯ মাত্রার এই ভূমিকম্প অনুভূত হয়। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (USGS) জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির কেন্দ্র ভারতের আসামের ধেকিয়াজুলি থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দূরে।

এশিয়ার এই ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে মাঝারি মাত্রার এই কম্পন বাংলাদেশসহ অন্তত ছয়টি দেশে অনুভূত হয়েছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে মানুষের মধ্যে। বিশেষ করে বহুতল ভবনে থাকা মানুষজন দ্রুত খোলা জায়গায় নেমে আসেন।


কোন কোন দেশে ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়েছে?

যদিও ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল ভারতের আসাম, তবে এর প্রভাব পড়েছে পার্শ্ববর্তী কয়েকটি দেশে।

এই ছয় দেশে কমবেশি সবাই ভূমিকম্পের প্রভাব টের পেয়েছে। যদিও বাংলাদেশে এখনো কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি, তবে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, আসামে কিছু ভবনে দেয়ালে ফাটল দেখা দিয়েছে।


বাংলাদেশে পরিস্থিতি

বাংলাদেশ ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ হিসেবে পরিচিত। গত কয়েক দশকে বড় ধরনের ভূমিকম্প না হলেও মাঝারি মাত্রার কম্পন বারবার মানুষকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

ঢাকায় বহু মানুষ কম্পন অনুভূত হওয়ার সাথে সাথে ঘরবাড়ি ছেড়ে বাইরে চলে আসেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই ভূমিকম্পের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন। কেউ কেউ জানান, প্রথমে বুঝতে না পারলেও পরে হালকা মাথা ঘোরা বা আসবাবপত্র নড়াচড়া করায় আতঙ্কে পড়েন।

সিলেট ও চট্টগ্রামে ভূমিকম্পের প্রভাব তুলনামূলকভাবে বেশি অনুভূত হয়। বিশেষ করে বহুতল ভবনে বসবাসকারী মানুষরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তবে দেশের কোথাও গুরুতর ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।


ভূমিকম্প কেন হয়? – বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা

ভূমিকম্প মূলত পৃথিবীর ভেতরে টেকটোনিক প্লেটগুলোর নড়াচড়ার কারণে ঘটে। পৃথিবীর ভূত্বক বিভিন্ন খণ্ডে বিভক্ত, যেগুলোকে প্লেট বলা হয়। এই প্লেটগুলো যখন একে অপরের সাথে সংঘর্ষে আসে, তখন শক্তির সঞ্চয় ঘটে। সেই শক্তি হঠাৎ করে মুক্তি পেলে ভূমিকম্প সৃষ্টি হয়।

দক্ষিণ এশিয়া একটি ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল কারণ হিমালয় পর্বতমালা তৈরি হয়েছে ভারতীয় প্লেট ও ইউরেশিয়ান প্লেটের সংঘর্ষে। এখনো এই প্লেটগুলোর চাপ অব্যাহত রয়েছে। ফলে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটানসহ আশেপাশের দেশগুলোতে প্রায়ই ছোট-বড় ভূমিকম্প দেখা দেয়।


ইতিহাস থেকে শিক্ষা

বাংলাদেশ ও এর আশেপাশের অঞ্চলে অতীতে বড় বড় ভূমিকম্প হয়েছে।

এইসব ঘটনার পর থেকে বিশেষজ্ঞরা বারবার সতর্ক করে আসছেন যে, বাংলাদেশে বড় ধরনের ভূমিকম্প হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।


মানুষের প্রতিক্রিয়া

ভূমিকম্পের সময় মানুষের প্রতিক্রিয়া প্রায় একই রকম হয়ে থাকে। এবারও দেখা গেছে—


উপসংহার

রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৯ মাত্রার এই ভূমিকম্প হয়তো বড় কোনো ক্ষতি করেনি, তবে এটি আবারও আমাদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছে—আমরা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাস করছি। দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের জন্য ভূমিকম্প নতুন কিছু নয়, কিন্তু প্রস্তুতির ঘাটতি থাকলে ছোট ভূমিকম্পও ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

তাই এখনই সময় সচেতন হওয়ার, ভূমিকম্প মোকাবিলায় প্রস্তুত হওয়ার। কারণ প্রাকৃতিক দুর্যোগ থামানো না গেলেও সঠিক পরিকল্পনা ও সতর্কতায় ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে কমানো সম্ভব।

Exit mobile version